ঢাকাশুক্রবার , ৬ জুনe ২০২৫
  1. সর্বশেষ

ইতিহাসের বিচিত্র এক মাস ‘ফেব্রুয়ারি’

প্রতিবেদক
নিউজ ডেস্ক
১৩ মার্চ ২০২৫, ২:১৬ বিকাল

Link Copied!

ফেব্রুয়ারি মাসের দিনসংখ্যা নিয়ে ক্যালেন্ডারের ইতিহাস বেশ রঙিন! আজ আমরা জানি, এটি বছরের সবচেয়ে ছোট মাস, কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ফেব্রুয়ারির দৈর্ঘ্য একেক সময়ে একেক রকম ছিল—কখন‌ও ৩০ দিন, কখনও ২৯, ২৮, আবার কখনও ১৫ দিন!

রোমানরা যখন প্রথম তাদের ক্যালেন্ডার বানায়, তখন বছর শুরু হত মার্চ মাস দিয়ে, আর ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস। তারা এটিকে ২৮ দিনে বেঁধেছিল, কিন্তু জুলিয়ান ক্যালেন্ডার চালু হওয়ার পর লিপ ইয়ারের ধারণা আসে, যেখানে অতিরিক্ত ১ দিন যোগ করা হয়। পরে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এসে সেটাকে আরও নিখুঁত করে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার? ১৭১২ সালে সুইডেন এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেয়—তারা সেই বছর ফেব্রুয়ারি মাসকে ৩০ দিনে বাড়িয়ে দেয়! অর্থাৎ, কিছু সময়ের জন্য হলেও দুনিয়ায় ৩০ দিনের ফেব্রুয়ারি ছিল!

ক্যালেন্ডার বদলের এসব কাহিনি শুনতে ছোটখাট বিষয় মনে হলেও, সময়কে মেপে নেওয়ার এই লড়াই আসলে সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে দিয়েছে।
.

প্রাচীন রোমান ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারির দৈর্ঘ্য

প্রাচীন রোমান ক্যালেন্ডারের শুরুতে বছরে মাসের সংখ্যা ছিল ১০টি। তখন ছিল রোমুলুসের শাসন। রোমুলুস (Romulus) ছিলেন রোম নগরীর কিংবদন্তি প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রথম রাজা। রোমান পুরাণ অনুসারে, তিনি তার যমজ ভাই রেমুস (Remus)-এর সঙ্গে রোম শহর প্রতিষ্ঠা করেন ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বে। রোমানরা বিশ্বাস করত, তিনি রোমের পিতা এবং তার নাম থেকেই “Rome” শব্দটি এসেছে।

সেই ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি মাসের কোনো অস্তিত্ব ছিল না! পরে রোমের দ্বিতীয় রাজা নুমা পম্পিলিয়াস ক্যালেন্ডারে পরিবর্তন আনেন। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, তিনি জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারি মাস যোগ করেন। এরপর ১২ মাসের একটা পূর্ণাঙ্গ ক্যালেন্ডার চালু হয়। নুমার ক্যালেন্ডারে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—দুটি মাসই শুরুতে ছিল ২৮ দিনের।
.

মাসের নাম “মের্সেডোনিয়াস”

রোমানরা জ্যোতিষ্কবিদ্যা আর ক্যালেন্ডার সংস্কারে সিরিয়াস ছিল। তারা ৩৫৫ দিনের চান্দ্র ক্যালেন্ডার চালু করে। সেই ক্যালেন্ডারে মাসগুলির দৈর্ঘ্য ছিল সব বেজোড় সংখ্যার। সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবে কিছু মাস ৩১ দিনের করা হয়। বাকিগুলি রাখা হয় ২৯ দিনের। কিন্তু ফেব্রুয়ারি রাখা হয় আলাদাভাবে ২৮ দিনের।

রোমানদের বিশ্বাস ছিল, ২৮ একটা জোড় সংখ্যা। আর জোড় সংখ্যা তাদের মতে অশুভ! এই মাসটা তারা শুদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানের জন্য উৎসর্গ করেছিল।

এভাবে ৩৫৫ দিনের রোমান চান্দ্র ক্যালেন্ডার প্রতি বছরে সৌর বছরের তুলনায় প্রায় ১০ দিন করে পেছাতে থাকে। এই গড়মিল সামলাতে রোমানরা মাঝেমধ্যে অতিরিক্ত একটা মাস যোগ করত বছরে। এই অতিরিক্ত মাসকে বলা হত অন্তর্বর্তী মাস। সাধারণত প্রতি দুই বা তিন বছরে ফেব্রুয়ারির পরে একটি “মের্সেডোনিয়াস” নামক মাস যোগ করে ক্যালেন্ডার ঠিক রাখা হত​।

তাই কখনও কখনও ফেব্রুয়ারি মাসকে ২৩ বা ২৪ দিনে সংক্ষিপ্ত করতে হত। তারপর সেই পরবর্তী অন্তর্বর্তী মাস শুরু হত। তবে পুরোহিতরা মাঝে মাঝে গাফিলতি করতেন। রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল। এর ফলে, অন্তর্বর্তী মাসগুলি ঠিক সময়ে যোগ করা হয়ে উঠত না। এর কারণে ধীরে ধীরে রোমান ক্যালেন্ডার ঋতু বা চাষবাসের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে পড়ে।
.

জুলিয়ান ক্যালেন্ডার সংস্কার ও ফেব্রুয়ারি

রোমান ক্যালেন্ডারের এই বিশৃঙ্খলা দূর করেন জুলিয়াস সিজার। গাইয়ুস জুলিয়াস সিজার (Gaius Julius Caesar, ১০০ খ্রিস্টপূর্ব – ৪৪ খ্রিস্টপূর্ব) ছিলেন একজন রোমান সেনাপতি, রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিক, যিনি রোমান প্রজাতন্ত্রকে রোমান সাম্রাজ্যে রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি জুলিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন​। এই ক্যালেন্ডার সংস্কারের আগে ৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিরাট সমন্বয়মূলক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সেই বছরকে অতিরিক্ত মাস যুক্ত করার মাধ্যমে বছরের দৈর্ঘ্য ৪৪৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। যা ইতিহাসে “শেষ বিভ্রান্তিকর বছর” (“Ultimus Annus Confusionis”) নামে পরিচিত​।

এর পরের বছর সিজার মোট ১০টি অতিরিক্ত দিন স্থায়ীভাবে ক্যালেন্ডারে যুক্ত করেন। এর ফলে সাধারণ যেকোনো বছর ৩৬৫ দিনের বছরে পরিণত হয়​।

কোন মাস থেকে কত দিন যোগ করা হবে তা ঠিক করা ছিল। জানুয়ারি, আগস্ট (তৎকালীন সেক্সটিলিস) ও ডিসেম্বর মাসে ২ দিন করে বাড়ানো হয়। এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসে বাড়ানো হয়​ ১ দিন করে। ফেব্রুয়ারি মাসের দৈর্ঘ্য সিজার অপরিবর্তিত রেখেছিলেন—সাধারণ বছরগুলিতে আগের মতই ২৮ দিন থাকল। এভাবে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে প্রতিটি সাধারণ বছরের মাসের দৈর্ঘ্য আজকে যেমন আছে তেমনটাই নির্ধারণ করা হয়েছিল।

জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে বড় সংযোজন ছিল লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষের ধারণা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ৪ বছরে একবার অতিরিক্ত ১টা দিন যোগ করা হত। এই অতিরিক্ত দিনটা ফেব্রুয়ারি মাসের সাথে যোগ করা হত। রোমান পদ্ধতিতে, ফেব্রুয়ারির ২৩ তারিখ দু’বার পালিত হত। এই দিনটাকে বিসসেক্সটাইল (Bissextile) বলা হত।

আধুনিক গণনায় যা ২৯ ফেব্রুয়ারি হিসাবে বিবেচিত হয়। ফলে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সাধারণ বছরে ফেব্রুয়ারি ২৮ দিনের এবং প্রতি চতুর্থ বছরে ফেব্রুয়ারি ২৯ দিনের হয়​।

উল্লেখ্য, প্রাথমিকভাবে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর রোমান পুরোহিতরা ভুলক্রমে প্রতি তিন বছর পর পর লিপ দিবস যোগ করতে শুরু করেছিল। সম্রাট অগাস্টাস এই ত্রুটি সংশোধন করার জন্য কিছু বছরের জন্য লিপ ইয়ার বন্ধ রাখেন এবং অবশেষে ৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে প্রতি ৪ বছর অন্তর লিপ ইয়ার নিয়মিত করেন​।
.

গ্রেগরিয়ান সংস্কার ও ফেব্রুয়ারির ওপর প্রভাব

জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ছিল বেশ কার্যকর। তবে এতে একটা সমস্যা ছিল। প্রতি ১২৮ বছরে, সৌর বছরের তুলনায় প্রায় ১ দিনের গড়মিল হয়ে যেত। ১৬শ শতাব্দীর শেষে দেখা গেল, জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী বসন্তের প্রথম দিন ছিল ২১ মার্চ। কিন্তু প্রকৃত বসন্তের প্রথম দিনের সাথে সেটার তারিখ মিলছিল না। আসল তারিখের তুলনায় ১০ দিন পিছিয়ে ছিল।

খ্রিস্টীয় অনুশাসন অনুযায়ী, ইস্টার উৎসবের তারিখ বসন্তের প্রথম দিনের ওপর নির্ভর করত। তাই, এই সমস্যা সমাধানে পোপ গ্রেগরী XIII ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন।

নতুন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে জুলিয়ান পদ্ধতির লিপ ইয়ারের নিয়ম সামান্য বদলানো হয়। আগের মত, প্রতি ৪ বছরে একদিন বাড়বে। তবে শতাব্দী বছরের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ শর্ত থাকবে। ১০০ দ্বারা বিভাজ্য বছরগুলি সাধারণত লিপ ইয়ার হবে না। তবে, যদি সেই বছরটি ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হয়, তাহলে সেটি লিপ ইয়ার হবে।

উদাহরণস্বরূপ, ১৭০০, ১৮০০, ১৯০০ সালগুলিতে ফেব্রুয়ারিতে অতিরিক্ত দিন যুক্ত হয়নি, কিন্তু ১৬০০ বা ২০০০ সালে যুক্ত হয়েছে​। এই নিয়মের ফলে ক্যালেন্ডারের গড় দৈর্ঘ্য ৩৬৫.২৪২৫ দিন হয়, যা প্রকৃত সৌর বছরের খুব কাছাকাছি​।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালুর সময় জমে থাকা ১০ দিনের ত্রুটি সরিয়ে ফেলতেও বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পোপের আদেশ অনুযায়ী ১৫৮২ সালের অক্টোবর মাস থেকে ১০ দিন বাদ দেওয়া হয়—৪ অক্টোবরের পরের দিনটিকে সরাসরি ১৫ অক্টোবর ঘোষণা করা হয়েছিল​!
.

ফেব্রুয়ারি মাসে ৩০ দিনের ঐতিহাসিক নজির

সাধারণত জুলিয়ান বা গ্রেগরিয়ান কোনো ক্যালেন্ডারেই ফেব্রুয়ারি ৩০ দিন ছিল না। তবুও ইতিহাসে দুইবার ব্যতিক্রম হিসাবে ফেব্রুয়ারি ৩০ তারিখ সত্যিকার অর্থে বিদ্যমান ছিল। এক, সুইডেনে ১৭১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস ৩০ দিনের ছিল। সুইডেন জুলিয়ান থেকে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার রূপান্তরের একটি অনন্য পদ্ধতি কার্যকর করেছিল। তারা সিদ্ধান্ত নেয় সরাসরি ১০-১১ দিন বাদ না দিয়ে ১৭০০ থেকে ১৭৪০ সালের মধ্যে যেসব লিপ ইয়ার আসবে সবগুলি এড়িয়ে ধীরে ধীরে ব্যবধান পূরণ করা হবে​। অর্থাৎ এই সময়কালে কোনো লিপ ইয়ার থাকবে না। সব ফেব্রুয়ারি হবে ২৮ দিনের।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭০০ সালকে (যা জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে লিপ ইয়ার ছিল) সুইডেনে লিপ ইয়ার হিসাবে পালন করে নাই। কিন্তু পরবর্তী ধারাবাহিকতায় ভুলবশত ১৭০৪ ও ১৭০৮ সালে তারা আবার লিপ ইয়ার পালন করে ফেলে! ফলে সুইডেনের তারিখ তখন জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান কোনোটার সাথেই মিলছিল না​।

এই বিশৃঙ্খলা সামলাতে অবশেষে সুইডেন গ্রেগরিয়ান পরিবর্তন প্রকল্প বাতিল করে পুরোনো জুলিয়ান পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জুলিয়ান তারিখে ফিরতে ১৭১২ সালে দুইদিন অতিরিক্ত যোগ করা হয়—কারণ ১৭১২ সালটি নিজেই জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে লিপ ইয়ার ছিল, তাই স্বাভাবিক ২৯ ফেব্রুয়ারির পাশাপাশি আগে ১৭০০ সালে বাদ পড়া দিনটিও ফেরত দিতে ১৭১২ সালে ৩০ ফেব্রুয়ারি তারিখটি যুক্ত করা হয়​। ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাস সুইডেনে ৩০ দিনের ছিল এবং বছরে দিনসংখ্যা হয়েছিল ৩৬৭​।

এটি ইতিহাসে প্রমাণসিদ্ধ একমাত্র ঘটনা, যেখানে ফেব্রুয়ারি সত্যিকার অর্থে ৩০ দিনে সম্প্রসারিত হয়েছিল।
.

সোভিয়েত বিপ্লবী ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি ৩০

সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯২৯-১৯৩০ সময়কালে পরীক্ষামূলকভাবে একটি বিশেষ ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করা হয়। উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে তারা ৭ দিনের সপ্তাহের বদলে ৫ দিনের কর্মসপ্তাহ চালু করে এবং বছরের ১২টি মাসকে সমান ৩০ দিন করে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়​। তাতে ৩৬০ দিন হয়, বাকি ৫/৬টি অতিরিক্ত দিনকে মাসের বাইরে বিশেষ ছুটির দিন হিসাবে গণ্য করা হয় (ফ্রান্সের বিপ্লবী ক্যালেন্ডারের আদলে)​।

এই প্রস্তাবনা অনুসারে ১৯৩০ ও ১৯৩১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসকে ৩০ দিন ধরে ক্যালেন্ডার ছাপানো হয়েছিল। তবে বাস্তবে একই সময়ে সরকারি তারিখগুলি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারেই চলছিল, দৈনিক পত্রিকা প্রাভদা-তে তখনও ১৯৩০ ও ১৯৩১ সালের ফেব্রুয়ারি ২৮ দিন হিসাবেই ছাপা হত​। কয়েক বছরের মধ্যেই এই বিপ্লবী পদ্ধতি পরিত্যাজ্য হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনরায় ৭ দিনের সপ্তাহসহ নিয়মিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে শুরু করে।
.

অন্য কিছু বছর, যখন ফেব্রুয়ারির দৈর্ঘ্য বদলে গিয়েছিল

আরো কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারি মাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম দিনের ছিল।

৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ (রোমান “বিভ্রান্তির বছর”)—জুলিয়ান ক্যালেন্ডার কার্যকর করার আগে রোমান পুরোহিতদের ভুল সংশোধনে এই বছরে অতিরিক্ত দুইটি মাস যোগ করা হয়। ফলস্বরূপ ৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিক ২৮ দিনের বদলে মাত্র ২৪ দিন রাখা হয় এবং পুরো বছরে ১৫ মাসে মোট ৪৪৫ দিন গণনা করা হয়​।

১৭৫৩ সালে সুইডেন—গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণের সময় সুইডেন ১৭৫৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত বাদ দেয়। তারা ১৭ ফেব্রুয়ারির পর সরাসরি ১ মার্চ গণনা শুরু করে​। তাই ওই বছরে ফেব্রুয়ারি ছিল মাত্র ১৭ দিনের। পরবর্তী বছর থেকে সুইডেন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে শুরু করে।

১৯১৮ সালে রাশিয়া—অক্টোবর বিপ্লবের পর সোভিয়েত রাশিয়া জুলিয়ান থেকে গ্রেগরিয়ান তারিখে পরিবর্তিত হয়। পুরোনো ও নতুন তারিখের মধ্যে তখন ১৩ দিনের পার্থক্য ছিল, যা দূর করতে ১৯১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়। রাশিয়ায় ১৯১৮ সালের ফেব্রুয়ারি তাই ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলেছিল (মোট ১৫ দিন)​।
.

বর্তমান ব্যবস্থা ও ফেব্রুয়ারির দৈর্ঘ্যের যৌক্তিকতা

এখন বিশ্বজুড়ে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রচলিত, যেখানে ফেব্রুয়ারি মাস সাধারণত ২৮ দিন এবং প্রতি চতুর্থ বছরে (লিপ ইয়ার) ২৯ দিনের হয়ে থাকে​। এই অতিরিক্ত দিনটি ফেব্রুয়ারিতে যুক্ত করার ঐতিহাসিক কারণ হল, রোমান ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারি ছিল বছরের শেষ মাস এবং প্রয়োজনীয় যোগ-বিয়োগ ওই মাসেই করা হত​। জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান দুই ব্যবস্থাতেই তাই ফেব্রুয়ারিতেই লিপ দিবস যোগ করার রীতি গড়ে ওঠে।

বর্তমানে গ্রেগরিয়ান নিয়ম অনুযায়ী যে বছর ৪ দ্বারা বিভাজ্য (তবে শতাব্দী হলে ৪০০ দ্বারা বিভাজ্য হতে হবে) সেই বছরে ফেব্রুয়ারি ২৯ দিনের হয়​। এই পদ্ধতি গ্রহণ করার উদ্দেশ্য ছিল ক্যালেন্ডারকে সৌর বছরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখা।

গ্রেগরিয়ান সংস্কারের ফলে ক্যালেন্ডারের গড় বছরকাল ৩৬৫.২৪২৫ দিনের হয়ে গেছে। এটা পৃথিবীর বার্ষিক সূর্যপরিক্রমার সময়কাল (প্রায় ৩৬৫.২৪২২ দিন) থেকে খুব অল্পই ভিন্ন। তাই, বর্তমান ক্যালেন্ডারে ফেব্রুয়ারির দৈর্ঘ্য ২৮/২৯ দিন রাখা একটি যুক্তিসংগত সমাধান। এটি প্রতি ৪ বছরে একটি দিন বাড়িয়ে সামঞ্জস্য রক্ষা করে। একই সাথে অতিরিক্ত লিপ ইয়ার কমানো হয় (যেমন ১০০ দিয়ে বিভাজ্য বছরগুলিতে)। এতে দীর্ঘমেয়াদি অতিরিক্ত সংশোধনও আনা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন

‘সরকারের নতুন পলিসি জাতীয় চামড়া সম্পদের ধ্বংস ডেকে আনবে’

ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ

হাজীদের নিরাপত্তায় মক্কায় বসানো হলো যুক্তরাষ্ট্রের বানানো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

ফরিদপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর গ্রেপ্তার

অতিরিক্ত ভাড়া আদায় যাত্রী ভোগান্তি রোধে পিরোজপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা

চাঁদাবাজি-পেশিশক্তি প্রদর্শনের দায়ে যুবদল নেতা নয়নকে বহিষ্কার

অবসরপ্রাপ্ত আর্মির বসতঘর ঘেঁষে ৩০ ফুট গভীর করে মাটি খনন, ঘরে বিশাল ফাটল, যেই কোনো মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা

পদত্যাগ করলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র রাশেদা

দ্রুত সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি এলাকাবাসীর

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সাংবাদিক সাইফুলের বিরুদ্ধে হাঁস চুরির অভিযোগে তোলপার

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী নেত্রীর ওপর হামলা, থানার ওসি প্রত্যাহার

অপরিকল্পিত উন্নয়নে ডুবছে এলাকা, নাজিরপুর তেমুনিয়া বিশ্বরোড সহ মাধবপুরে কয়েকটি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট প্লাবিত